সেন্টমার্টিন দ্বীপ, কিভাবে যাবেন ? কোথায় থাকবেন ? কি আছে এই দ্বীপে ?
বিশ্বের অন্যতম বদ্বীপ বাংলাদেশ । আর বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও রয়েছে নদী আর দ্বীপ । এ দেশের সেরা দ্বীপগুলোর মধ্যে অন্যতম দ্বীপ হল সেন্টমার্টিন । এখানে বছরজুড়ে পৃথিবীর নানা দেশের বহু মানুষের ভিড় লেগেই থাকে । তারা এখানে দেখতে আসে প্রকৃতির চমৎকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য । প্রতি বছর বিশ্বের নানা দেশ থেকে হাজার হাজার পর্যটক এই দ্বীপে বেড়াতে আসে। তারা সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপলব্ধি করে । কোনো কোনো পর্যটক এই সেন্টমার্টিন দ্বীপকেই বিশ্বের সেরা দ্বীপ বলে থাকেন ।
আপানার চিরকাঙ্ক্ষিত এই প্রবাল দ্বীপ এবং ছেঁড়াদিয়ার নির্জনতা আপনাকে বিমোহিত করবেই ।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে বাসে করে কক্সবাজার যেতে হবে । কক্সবাজার থেকে ট্রলার কিংবা জাহাজে করে সেন্টমার্টিন যেতে হবে ।
কোথায় থাকবেন
সেন্টমার্টিন এ স্থানীয় হোটেল অথবা কক্সবাজার শহরের যেকোনো হোটেলেই থাকতে পারবেন । কক্সবাজার কে বলা হয় আবাসিক হোটেলের শহর । তাই কক্সবাজার শহরের যেকোন হোটেলে রাতযাপন করা যায় ।
অবস্থান
সেন্টমার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাংশে অবস্থিত একটি প্রবাল দ্বীপ । জিঞ্জিরা, দক্ষিণ পাড়া, গলাছিরা ও চেরাদিয়া এই চারটি দ্বীপ নিয়েই ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপ’ গঠিত । এটি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মিয়ানমারের উপকূল হতে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে নাফ নদীর মোহানায় অবস্থিত । দ্বীপটি উত্তর ও দক্ষিণে প্রায় ৫.৬৩ কিলোমিটার লম্বা । দ্বীপের প্রস্থ কোথাও ৭০০ মিটার আবার কোথাও ২০০ মিটার । দ্বীপটির পূর্ব, দক্ষিন ও পশ্চিম দিকে সাগরে অনেক দূর পর্যন্ত রয়েছে অগণিত শিলাস্তূপ । সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এই দ্বীপের গড় উচ্চতা ৩.৬ মিটার । এই দ্বীপে প্রচুর পরিমানে নারিকেল পাওয়া যায় বলে এই দ্বীপকে নারিকেল জিঞ্জিরাও বলা হয়ে থাকে ।
পূর্বকথা
সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রাচীন নাম ছিল জাজিরা । স্থানীয়দের মতে, আরব বণিকেরাই এই নাম দিয়েছিলেন । পরবর্তীকালে জাজিরা স্থানীয় লোকদের মাধ্যমে নারিকেল জিঞ্জিরা নামে বিখ্যাত হয়ে ওঠে । কিন্তু পরবর্তীতে ইংরেজরা একে সেন্টমার্টিন নামে অভিহিত করে বলে জানা যায় । এই দ্বীপের আয়তন প্রায় ৮ বর্গকিলোমিটার ও উত্তর-দক্ষিণে লম্বা । এই দ্বীপের তিন দিকে রয়েছে শিলা, যা জোয়াররে সময় তলিয়ে যায় এবং ভাটার সময় জেগে ওঠে । এগুলোকে ধরলে এর আয়তন হবে প্রায় ১০-১৫ বর্গকিলোমিটার । ভূতাত্ত্বিকগণের মতে দ্বীপটির বয়স প্রায় ২০ লক্ষ বছর ।
কি আছে এই দ্বীপে ?
সেন্টমার্টিন দ্বীপের মূল আকর্ষণ সামুদ্রিক কাঁকড়া, কাছিম, প্রবাল, মুক্তা আর বিভিন্ন প্রজাতির মাছের প্রাকৃতিক এ্যাকুরিয়াম । প্রায় ৬৬ প্রজাতির প্রবাল, ১৮৭ প্রজাতির শামুক-ঝিনুক, ১৫৩ প্রজাতির সামুদ্রিক শৈবাল, ১৫৭ প্রজাতির গুপ্তজীবী উদ্ভিদ ২৪০ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, ৪ প্রজাতির উভচর ও ১২০ প্রজাতির পাখি পাওয়া যায় । এছাড়াও রয়েছে ১৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণি ।
সেন্টমার্টিন দ্বীপে কেওড়া বন ছাড়া অন্য কোন প্রাকৃতিক বন নেই । দ্বীপের দক্ষিন দিকে প্রচুর পরিমাণে কেওড়ার ঝোপ-ঝাড় রয়েছে । এখানে কিছু পরিমাণে ম্যানগ্রোভ গাছও রয়েছে । অন্যান্য উদ্ভিদের মধ্যে রয়েছে শ্যাওড়া, সাগর লতা, বাইন গাছ ইত্যাদি ।
0 Comments