ওয়ালেট থেকে আব্বুর ছবি টা বের করে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।
আব্বুর ছবির দিকে তাকাতেই চোখ বেয়ে অজান্তেই পানি ঝরে পরলো।
আব্বু থাকলে হয়তো আজকে আমাকে এতটা অপমানিত হতে হতো না।
আব্বু এর যোগ্য জবাব দিত।
স্টেশনের চারিদিকে থমথমে পরিবেশ। গভীর রাত। আর গুটিকয়েক মানুষের আনাগোনা।
অনেকে আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। আমি কাঁদছি বলে। তাই হাত দিয়ে চোখের পানি মুছে মাথাটা ঘোরাতেই দেখলাম, দুটি মেয়ে পাগলের মতো পুরো স্টেশনে আমাকে খুঁজছে।
ওদেরকে দেখেই আব্বুর ছবিটা আমার ওয়ালেটে রেখে দিলাম।
সঙ্গে সঙ্গে ব্যাগ থেকে মাস্ক বের করে মুখটা ঢেকে নিলাম। আর মাথা নিচু করে মোবাইলটা টিপতে লাগলাম। যেন ওদেরকে এড়িয়ে যেতে পারি।
নিচের দিকে তাকিয়ে থাকতেই লক্ষ্য করলাম ওরা আমার সামনে দিয়ে চলে গেল। হয়তো আমাকে চিনতে পারেনি। মুখ ঢাকা বলে।
ওরা চলে গেছে।
তারপরও মুখ থেকে মাস্কটা খুলিনি। যদি আবার চলে আসে.??
কিন্তু কিছুক্ষণ পরই লক্ষ্য করলাম ওরা দুজন কোথা থেকে এসে আমার পাশে বসলো।
আমার বুকটা প্রচন্ড রকম ভাবে কাপছিল। তাহলে কি ওরা আমাকে চিনে ফেলেছে.??
আমার দুইপাশে দুজন বসে আছে গম্ভীর ভাবে। সামনের দিকে তাকিয়ে ছিল। প্রায় দুই মিনিট।
এই দুই মিনিট ধরে ওরা দুজন কোন কথাই বলছিল না। আমিও আমার মুখ থেকে মাস্ক সরাইনি। মোবাইল টিপতে লাগলাম।
আমি হয়তো ভেবেছিলাম ওরা আমাকে এখনো চিনতে পারেনি।
কিন্তু আমি ভুল ছিলাম। ওরা ঠিকই আমাকে চিনতে পেরেছিল।
হঠাৎ আমার ডান পাশে থাকা মেয়েটি বলে উঠলো--->
--চুরি করেছিস, নাকি ডাকাতি করেছিস, কোনটা.??
এভাবে মুখ ঢেকে আছিস কেন অপরাধীর মত.??
সে আর কেউ ছিল না। সেই মেয়েটি ছিল আমার জীবনের প্রথম ভালো লাগা, আমার জীবনের প্রথম ভালবাসাও, দোয়েল....!
আর আমার ডানে ছিল ওরই ছোট বোন, লিজা।
--আহ আপু...!
কি শুরু করেছিস.?? (লিজা)
--তুই চুপ কর...! (দোয়েল খুব রেগে)
এত বড় একটা অপরাধ করার পর ওকে আমি ক্ষমা করব ভেবেছিস.??
--তুই না বড্ড বেশি কথা বলিস আপু...!
--এই তুই এখান থেকে যা...!
--কই যাব.??
--দূরে যা...!
আমি ওর সাথে কথা বলব পার্সোনালি..!
--আশ্চর্য রাত তিনটা বাজে.!
আমি এখন যাব কই..??
---তোকে না থাপ্পড় দিয়ে গালে আমার আঙ্গুলের দাগ বসিয়ে দেবো।
এখানে কি চেয়ার এর অভাব আছে..??
দূরে একটা চেয়ারে গিয়ে বস।
যা এখান থেকে।
--ভালো লাগে না কিছু..! তোর জন্য সব সময়...!
--এই তুই গেলি এখান থেকে..! (দোয়েল এবার খুব রেগে)
দোয়েলের রাগ দেখে লিজা আমার পাশ থেকে উঠে গিয়ে দূরে একটা চেয়ারে গিয়ে বসলো।
এরপর দোয়েল একটু নিস্তব্ধ হলো। কিছুক্ষণের জন্য।
হঠাৎ করে সামনের দিকে তাকিয়ে খুব রাগী গলায় আমায় বলল--->
--কি হলো…??
এখনো মুখটা ঢেকে আছিস কেন..??
মাস্কটা সরা..!
তোর চাঁদ মুখটা একবার দেখি।
ওর কথা শুনে খুব বিব্রত হয়ে গেলাম। তারপর হাত দিয়ে মাস্ক টা সরিয়ে নিলাম।
মাথা নীচু করে আছি। ওর দিকে তাকাইনি।
--কি সমস্যা তোর.?? (দোয়েল খুব রেগে)
--কই..??
কিছু হয়নি তো.?? (আমি মাথা নিচু করে)
--কিছু যদি নাই হয়ে থাকে তাহলে এত রাতে তোর বাড়ি যাওয়ার দরকার পড়লো কেন.??
--এমনি...!
--এমনি মানে.??
এমনি মানে কি আরিয়ান.??
আমাকে বল,
তুই ঢাকায় এসেছিস এক মাস হয়েছে।
একটা মাস.....! এই এক মাসে তুই আমার সাথে একবারের জন্যও যোগাযোগ করার প্রয়োজন বোধ করলি না।
(আমি মাথা নিচু করে আছি শুধু.! ওর কথাগুলো শুনে যাচ্ছি.!)
--তুই লিজার সাথে গোপনে গোপনে ঠিক যোগাযোগ করেছিস।
ওর সাথে দেখা করেছিস।
কিন্তু আমার সাথে, আমার সাথে একটিবারের জন্য হলেও তুই দেখা করার প্রয়োজন বোধ করিস নি।
এমনকি আমাকে ফোন পর্যন্ত করিস নি।
তুই যে ঢাকায় একটি মাস ছিলি,
সেটা আমি জানতামো না।
তুই আমাকে জানানোর প্রয়োজন বোধটুকু করিস নি। আবার বলা নেই কওয়া নেই,
এত রাতে, রাত তিনটা বাজে তুই ঢাকা থেকে চলে যাচ্ছিস।
কি সমস্যা.??? তোর কি হয়েছে..??
--কিছু না.??? (মাথা নিচু করে)
--কিছু না মানে কি..??
তুই আমার দিকে তাকা...! মাথা নিচু করে আছিস কেন.??
বল, উত্তর দে....!
নিশ্চয়ই তোর কোনো সমস্যা হয়েছে।
তোর কোন প্রবলেম আছে যার কারণে....!
--প্লিজ..! (ওকে থামিয়ে দিয়ে)
আমার কোনো সমস্যা হয়নি।
আমি ঠিক আছি।
আর আপনি এত রাতে লিজাকে নিয়ে এখানে এসেছেন কেন..??
যদি কোন বিপদ হত..???
মামা নিশ্চয়ই আপনার জন্য চিন্তা করছেন।
--চিন্তা করার প্রয়োজন নেই....!
ড্রাইভার নিয়ে এসছি...!
--কেন এসেছেন এখানে আপনি..??
--এই তুই আপনি আপনি করা বন্ধ করতো...!
বিরক্ত লাগে তোর মুখ থেকে শব্দ টা শুনতে।
তুই করে বলতে পারিস না হা.???
আমি নিচের দিকে তাকিয়ে আছি। ওর দিকে তাকিয়ে ওর মুখোমুখি কথা বলার কোন ক্ষমতা আমার ছিল না। সব ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি।
হঠাত ও আমার গালে হাত দিয়ে বলল-->
--কি হয়েছে তোর আরিয়ান…???
আমাকে বল।। কোন সমস্যা…??
--কই না তো...?
--তাহলে তুই এত রাতে চলে যাচ্ছিস কেন…??
আর তুই যে ঢাকায় এসেছিস প্রায় এক মাস।
তুই আমার সাথে একবারও দেখা করতে চাস নি কেন..??
আমার সাথে যোগাযোগ করার ইচ্ছা হয়নি তোর..?? কখনো আমাকে মনে পড়ে..??
ঐ মায়াবী মায়াময় কথাগুলো যেন আমার হৃদয় থাকা কষ্ট গুলো কে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে দ্বিগুণ।
কি করে তোমায় বলবো দোয়েল..?? তোমায় আমি হারিয়ে ফেলেছি সারা জীবনের জন্য..!
তোমায় না বলা ভালোবাসার অনুভূতির কথা গুলো না বলাই থেকে গেল।
হেরে গিয়েছি আমি আর হারিয়ে ফেলেছি তোমায়।
--কি হলো..??
উত্তর দিচ্ছিস না যে....?
--আমার কিছু হয়নি...!
--বারবার এক কথা বলে আমার মেজাজ গরম করবিনা আরিয়ান...!
কিছু না হলে তুই আমার সাথে কেন দেখা করিস নি। এই এক মাসে তুই ঢাকায় ছিলি।
একটি মাস....! আমার সাথে দেখা করিস নি আর হুট করে রাত তিনটে বাজে তুই চলে যাচ্ছিস ঢাকা ছেড়ে।
মানলাম, মানলাম তোর সমস্যা আছে কিন্তু লিজা, লিজা তো তোর ছোট বোনের চেয়েও বেশি। ওকে এত আদর করিস তুই, তুই ওকে পর্যন্ত না জানিয়ে ঢাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছিলি।
কেন.? উত্তর দে..?
হুট করে আমি কিছু বলতে যাবো হঠাৎ করেই একটা বিকট শব্দ করে ট্রেন চলে এলো।
আমি দাঁড়িয়ে গেলাম। ব্যাগটা হাতে নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম--->
--ট্রেন চলে এসছে...!
যেতে হবে। আমি আসি এখন।
কথাটা বলেই যে চলে যাব অমনি পেছন থেকে দোয়েল আমার হাতটা ধরে বললো--->
--আমাকেও বলবি না তোর সমস্যাটার কথা...! আমি কি তোর কাছে এতোটাই পর হয়ে গেছি...! (খুব মায়াবী ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে বলল কথা গুলো)
ওর চেহারায় তাকালেই যেন আমি ওর মাঝে হারিয়ে যাই। ওর মায়ায় পড়ে যাই।
কিন্তু আমি যে কথা দিয়েছি....!
ওকে যে বলা যাবে না, কিছু বলা যাবে না ওকে।
ওর হাত থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে একটা শুকনো হাসি দিয়ে বললাম--->
--একদিন সময় করে আমাদের বাসায় আসবেন। লিজাকে নিয়ে।
অনেকদিন আমাদের বাসায় আসেন না।
--ব্যাস এটুকুই বলার ছিল তোর...!
দোয়েলের আবেগময় কথা গুলো যেন বারবার আমার প্রতি ওর ভালোবাসার অনুভূতির প্রকাশ করছে। কিন্তু আমি যে নিরুপায়।
শত চাওয়া সত্ত্বেও দোয়েলকে আমি আর আপন করে পাব না।
একমাত্র আল্লাহ জানে, আমার এই হৃদয়ে কেমন ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
এক নিষ্ঠুর পরিস্থিতির সম্মুখীন আমি। সেটা কিভাবে বোঝাবো দোয়েলকে…??
--কি হলো...?
আর কিছু বলবি না..!
--ট্রেন চলে যাবে..??
আমি আসি এখন...!
পরে কথা হবে।
ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও ওর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ব্যাগটা হাতে নিয়ে চলে এলাম।
হেটে আসলাম, প্রতিটা হাটার শব্দ আমার হৃদয়ে আঘাত করছিল।
যেই ট্রেনে উঠতে যাবো অমনি পেছন থেকে একজন আমার হাত টেনে ধরলো।
তাকিয়ে দেখি লিজা। আমার হাত ধরে কাঁদছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে ব্যাগটা মাটিতে রেখে লিজার দুই গালে হাত দিয়ে বললাম....!
--কিরে তুই কাঁদছিস কেন..??
(লিজা অনর্গল কেঁদেই চলেছে)
--লিজা, কি হয়েছে...!
কাঁদছিস কেন..???
--আমায় ক্ষমা করে দিও ভাইয়া...! (লিজা কেঁদে কেঁদে)
--ক্ষমা করব...? কিসের জন্য..???
--আমার জন্যই আজ তোমাকে এতটা অপমানিত হতে হয়েছে।।
শুধুমাত্র আমার জন্য, আজ তোমাকে এতটা অপমানিত হতে হয়েছে, শুধুমাত্র আমার জন্য...!
লিজার চোখের পানি মুছে দিয়ে বললাম--->
--একটা কথা স্পষ্ট করে শুনে রাখ...!
এই সমস্ত কথাগুলো, যা হয়েছে, যা ঘটেছে, তা যেন কেউ জানতে না পারে।
বুঝতে পেরেছিস..??
--কিভাবে তুমি এতটা কষ্ট সহ্য করে....!
সঙ্গে সঙ্গে ওকে থামিয়ে দিয়ামম। আমার চোখ থেকে দু'ফোটা অশ্রু ঝরে গেল।
--লিজা, তুই বুঝতে পারছিস না কেন বোন..??
আমি হেরে গেছি রে, আমি হেরে গেছি..!
কথাটা শুনেই লিজা আমার হাত ছেড়ে দিয়ে খুব গম্ভীর গলায় বলল--->
--তুমি কিন্তু চাইলেই আপু কে পেতে পারো....!
--চুপ...! একদম চুপ...!
--এসব কথা বলবি না....!
--কিন্তু ভাইয়া...!
--চুপ....!
লিজা তুই আমাকে কথা দে...!
এসব কথা তুই বলবি না দোয়েলকে..!
--ভাইয়া তুমি.....? (কেঁদে কেঁদে)
--লিজা প্লিজ,
বোঝার চেষ্টা কর..! কথা দে এইসব কথা দোয়েলকে বলবি না...!
--কথা দিলাম.! বলবো না আপু কে....!
কথাটা বলেই লিজা কেঁদে দিল। আর ওর কান্না থামাতে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম আমি।
দূর থেকে দোয়েল সবকিছু দেখছিল। হয়তো বুঝতে পারছিল না আমরা কি নিয়ে কথা বলছি। হয়তো কোনদিন পারবেও না। এভাবেই চাপা থেকে যাবে।
--কাঁদে না বোন..!. আমার জন্য কষ্ট পেতে হবে না তোকে...!
আমি আমি মানিয়ে নেব রে।
লিজা মাথা নিচু করে শুধু চোখের পানি ফেলছে। কারণ আজকে আমার সাথে যা হয়েছে তার জন্য ও নিজেকে দায়ী ভাবছে।
হঠাৎ করেই ট্রেনে সাইরেন বেজে উঠল। একটু পরে ছেড়ে দেবে। তারপর আমি ওর কপালে একটা চুমু খেয়ে বললাম--->
--ভালো থাকিস.....! পড়াশোনা ঠিকমতো করবি, ঠিক আছে ??? আর যা বলেছি তা যেন মনে থাকে..?
লিজা মাথা নিচু করেই আছে।
আমি ট্রেনে উঠে পড়লাম। ট্রেনে উঠেই দোয়েলের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম।
হয়তো জীবনের এক কঠিন পর্যায়ে এসে দোয়েলের সাথে এভাবে লুকোচুরি খেলতে হচ্ছে আমাকে।
হঠাৎ করেই ট্রেনটা ছেড়ে দিল। হাত দিয়ে লিজাকে বিদায় জানালাম।
শেষ পর্যন্ত ওদের দিকে তাকিয়ে ছিলাম যতক্ষণ পর্যন্ত না ওরা দুচোখে মিলিয়ে যাচ্ছিল। তারপর একপর্যায়ে যখন ওদেরকে দেখা যাচ্ছিল না, নিজের সিটে এসে বসলাম।
ট্রেনটা চলছিল আর সেই রাতে ওই ট্রেনের সিটে বসে জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া কিছু প্রিয় মানুষ গুলোকে খুব বেশি মনে পড়ছিল।
তার মধ্যে একজন ছিল আমার আব্বু। আমার বন্ধুর মত ছিল কিন্তু আজ........!
কথাটা মনে পরতেই চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ল। বুকের মধ্যে ব্যাগটা জাপ্টে ধরে মাথাটা সিটে দিয়ে শুধু চোখ দিয়ে ব্যর্থতার জল ঝরাচ্ছিলাম।
এভাবে কাঁদতে কাঁদতে কখন যে দুচোখ টা লেগে এসেছে, বুঝতেই পারিনি।
ঘুম ভাঙলো সকাল বেলা, ট্রেনের আওয়াজে। চোখ খুলে দেখি স্টেশনে পৌঁছে গেছি।
স্টেশন থেকে নেমে একটা রিকশা নিয়ে সোজা বাড়িতে যাওয়ার জন্য রওনা হলাম। তারপর রিক্সাটা সোজা আমাদের বাড়ির সামনে এসে থামল।
রিক্সা থেকে নেমে দরজার সামনে গিয়ে বেল বাজালাম।
কিছুক্ষণ পর এসে সাহিদা আপু..! (আমাদের বাড়ির কাজের আপু) এসে দরজা খুলল।
সেতো আমাকে দেখেই হা করে একরাশ হাসি দিয়ে বলল---
--আরে আরিয়ান...! তুই…?
কেমন আছোস…??
--ভালো আছি আপু...!
তুমি কেমন আছো…??
--আমিও ভালো আছি...! কিন্তু বলা নাই কওয়া নাই, হঠাৎ কইরা চইলা আইলি ঢাকা থিকা.!
--এমনি আপু...! ভালো লাগছিলো না.! তাই চলে এসেছি…!
ভাইয়া কোথায়…???
--তোর ভাই বাজারে গেছে...!
--আর তিন্নি..! (আমার বড় ভাইয়ার একমাত্র মেয়ে)
ও কোথায়..?
--ওরেও লইয়া গেছে বাজারে...!
--আচ্ছা তুমি আমার জন্য নাস্তা বানাও...!
খুব ক্ষুধা পেয়েছে আমার, আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
--হ যা যা.!
তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হইয়া আয় আমি তোর লিগা খাবার বানাইতাছি।
তারপর চলে এলাম আমার রুমে। হৃদয় জুড়ে যেন কালো মেঘ। চারিদিকে ঘন অন্ধকার। যেন হারানোর তীব্র যন্ত্রণা আমাকে নিঃশেষ করে ফেলতে চাইছে।
এসেই বিছানায় মাথা দিয়ে দিলাম। বারবার চোখের কোন দিয়ে অশ্রু ঝরছে।
নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, ভাইয়ার সামনে প্রকাশ করা যাবে না আমার এই.....!
না হলে ভাইয়া খুব কষ্ট পাবে, হাত দিয়ে চোখটা মুছতেই উঠে পড়লাম।
তারপর যেই ওয়াশরুমে যাব, অমনি আমার নজর পড়লো টেবিলের উপর।
আমার টেবিলের উপর একটি বড় ধরনের বাক্স রাখা আছে। পার্সেল আকারে।
বাক্স টা হাতে নিতেই সাহিদা আপুকে ডাকতে লাগলাম--->
--সাহিদা আপু' সাহিদা আপু...! (খুব জোরে ডাকলাম)
সাহিদা আপু নিচ থেকে জবাব দিলো--->
--কিরে আরিয়ান....!
কি হইছে…? এত জোরে ডাকতাছোস ক্যান...?
--আমার রুমে এটা কিসের পার্সেল.?? কে দিয়েছে..??
--ওইটা তো তোর ভাইয়া ১০ দিন আগে তোর রুমে রাইখা দিছে...!
বলছে কাউরে ধরতে না.!
তুই আইলে এইটা দেখবি, এর লাইগা।
কথাটা শুনে আমি বেশ অবাক হলাম।
ভাইয়া রেখেছে.....?
কি থাকতে পারে এই বাক্সের ভেতর...?
এটা ভাবতে ভাবতেই বাক্স টা খুলতে লাগলাম।খুব অস্থির লাগছিল নিজের কাছে। অবশেষে বাক্সটা খুললাম।
তবে বাক্স টা খুলে বাক্সের ভেতর যা দেখলাম, তা দেখে আমার চোখ কপালে উঠে গেছিল।
ভয়ও পেয়েছিলাম। কল্পনাও করতে পারিনি এমন কিছু দেখব।
কারণ ওই বাক্সের ভেতর ছিল একটি রক্তাক্ত পাঞ্জাবি,যা সম্ভবত আব্বুর,।
আমার আব্বু আম্মুর ম্যারেজ সার্টিফিকেট আর একটি চিঠি.........!
#চলবে..
(গল্পের পরবর্তী পর্বগুলো পেতে Visit করুন এখানে)
ধন্যবাদ...
0 Comments